বিশেষ প্রতিনিধি ॥ গত কয়েক দিনে জোয়ারের পানিতে আউশের বীজতলা পানিতে ডুবে গেছে। সবজির খেত, পানের বরজ, মরিচ, আদা, হলুদ খেতে পানি ঢুকে পড়েছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ও অতি উচ্চতার জোয়ারে সবজি খেত প্লাবিত হয়েছে। জোয়ারের পানিতে খেতের করলা, বরবটি, ঢ্যাঁড়স, মরিচ, পুঁইশাক ও বেগুন নষ্ট হয়েছে। ভান্ডারিয়ায় গত কয়েক দিনে জোয়ারের পানিতে আউশ ধান, পানের বরজ ও সবজি খেত তলিয়ে গেছে। কীভাবে ক্ষতি কাটিয়ে উঠবেন, সেটা নিয়ে চিন্তিত কৃষক। কৃষকেরা জানান, গত কয়েক দিনে জোয়ারের পানিতে আউশের বীজতলা পানিতে ডুবে গেছে। এ ছাড়া গ্রীষ্মকালীন সবজির খেত, পানের বরজ, মরিচ, আদা, হলুদ, পেঁপে, ডালের খেতে পানি ঢুকে পড়েছে। এ কারণে ফসল ও সবজি পচে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া বসতবাড়ি পানিতে ঢুকে পড়েছে। বাড়ির আঙিনায় লাগানো শাকসবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে বাঁধ ভাঙা থাকায় জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে অনেক ফসলের খেত তলিয়ে গেছে। ভান্ডারিয়া উপজেলার মাটিভাঙ্গা গ্রামের কৃষক আবু বকর সিদ্দিক ও আবুল কালাম বলেন, চার দিন পানিতে খেত ডুবে থাকায় সবজির গাছ পচে গেছে। এসব গাছের সবজি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সদর উপজেলার শারিকতলা ডুমুরিতলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মিরাজুর রহমান বলেন, কচা নদীর তীরে বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে লোকালয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে। ফসল ও সবজির খেত প্লাবিত হয়েছে। এতে ফসল ও সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার সাত উপজেলার ৩৭টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সদর, ইন্দুরকানি ও মঠবাড়িয়া উপজেলায় নদীতীরের বেড়িবাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে। এতে কাঁচা ঘর, ফসল ও সবজি খেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পিরোজপুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৬৭ হেক্টর আউশের খেত, ৭ হাজার ৩১৮ হেক্টরে আউশের বীজতলা, ১ হাজার ৩৩৫ হেক্টরের বিভিন্ন জাতের সবজি, ১৪১ হেক্টরের পান, ১৬৫ হেক্টরের কলা, ৮ হেক্টরের পেঁপে, ১৮ হেক্টরের মরিচ, ১৫ হেক্টরের হলুদ, ৫ হেক্টরের আদা, ১ হেক্টরের তিল, ১৬৬ হেক্টরের পাট ও ৫ হেক্টরের ভুট্টাখেত পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পিরোজপুর কার্যালয়ের উপপরিচালক চিন্ময় রায় বলেন, ‘আমরা পানিতে নিমজ্জিত জমির ফসলের তালিকা করেছি। পানি নেমে যাওয়ার পর দু–এক দিনের মধ্যে ফসল ও সবজির ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হবে।’
Leave a Reply